বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৪

মোবাইল গ্রাহকদের স্বার্থে নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে বিটিআরসি

বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৪ - by Shah Alam 0

মোবাইল গ্রাহকদের স্বার্থে এবার নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে বিটিআরসি। এই নীতিমালা হলে বিভিন্ন অপারেটর অফারসহ এসএমএস ও ফোন কল করতে পারবে না। গ্রাহকরাও এসব অনাকাঙ্ক্ষিত এসএমএস ও কল থেকে মুক্তি পাবেন। এসব এসএমএস ও ফোন কল করে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। তাদের পাঠানো অফার এসএমএস কার্যকর করতে গিয়ে গ্রাহকরা টাকাই দিয়ে যাচ্ছেন- অথচ অফারের কোন সুবিধাই পাচ্ছেন না। দেশে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১২ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। বিভিন্ন কোম্পানি মোবাইল অপারেটরদের টাকা দিয়ে তাদের বিজ্ঞাপনও প্রচার করছে। সময়-অসময়ে ব্যাংকিং, ইন্স্যুরেন্স, আবাসন শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী, অটোমোবাইল, ভ্রমণ বিষয়ে ফোন কল বা এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। এসব এসএমএস গ্রাহকদের বিরক্তির কারণ। মোবাইল রিংটন ডাউনলোড করার ২২২২, ৪৮৪৮, আরও কিছু নম্বর থেকে ফোন করা হয়। এসব কল ধরলেই ফোন কলের মতোই টাকা কেটে নিচ্ছে অপারেটররা।

সূত্র জানিয়েছে, গ্রাহকদের এসব থেকে মুক্তি দিতে ‘কোন বিরক্তি না’ এই নামে বিটিআরসি নীতিমালা করতে যাচ্ছে। টেলিমার্কেটিং কোম্পানির বিজ্ঞাপন বা প্রমোশনাল এসএমএস বা অনাকাক্সিক্ষত ফোন কল থেকে মোবাইল ফোন গ্রাহকরা রক্ষা পাবে। এসএমএসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে গ্রাহকরা এ সেবা পাবেন। একটি ‘শর্ট কোড’ দিয়ে এই সেবা সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ধরনের এসএমএস বা ফোন কল পুরোপুরি ব্লক না করেও বিভিন্ন বিভাগ অনুযায়ী ব্লক করে দেয়ার সুযোগ রাখা হবে নীতিমালায়। এ জন্য গ্রাহকদের কোন ফি দিতে হবে না। সেবা নেয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা কার্যকর করার বিধানও রাখা হচ্ছে নীতিমালায়।

খসড়া এ নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, মোবাইল ফোন অপারেটরদের কোন সেবা সংস্কার বা বন্ধ রাখতে হলে গ্রাহকদের আগে থেকেই জানাতে হবে এসএমএস, ফোন বা দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। মোবাইল ফোন অপারেটররা গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। গ্রাহকদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রাহক তথ্য দিতে পারবে না। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারেও গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে অপারেটরদের। শিশুরা যাতে ইন্টারনেটের অপব্যবহার করতে না পারে সে ধরনের ব্যবস্থা অপারেটরদের তৈরি করতে হবে যা অভিভাবকরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের যে কোন ধরনের ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতেও উদ্যোগ নিতে হবে অপারেটরদের। ৬ মাসের বিল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রাহকরা যেন জানতে পারে সে ব্যবস্থাও করতে হবে অপারেটরদের।

এ নীতিমালা জারির পর ৯০ দিনের মধ্যে বিটিআরসি কার্যালয়ে একটি অভিযোগ কেন্দ্র খোলা হবে, যেখানে গ্রাহকরা অপারেটরদের সেবায় সন্তুষ্ট না হলে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এই নীতিমালা বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ জানিয়েছে, অপারেটররা গ্রাহকদের সেবা নিশ্চিত করতে সব সময় তৎপর থেকে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। নতুন কোন নীতিমালা চূড়ান্ত করার আগে অপারেটর ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে অপারেটরদের বৈঠকে বসা উচিত। নীতিমালার ভালমন্দ দিক বিবেচনা করে তা চূড়ান্ত করলে তবেই তা গ্রাহকদের জন্য বেশি কার্যকর হবে। টেলিকম বিশেষজ্ঞরা নীতিমালা প্রণয়ন করলেই হবে না। নীতিমালাটি প্রণয়ন হচ্ছে কিনা তা কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। যদি তা না করা হয় তাহলে গ্রাহকদের জন্য এ নীতিমালা কোন কাজে লাগবে না। বিশ্বের মোবাইল ব্যবহারকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ দশম স্থানে। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১২ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। দিন যত যাচ্ছে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ততই বাড়ছে।
এদিকে, ‘ডেভেলপমেন্ট অব স্টাটিজ এ্যান্ড অপারেশনাল প্রডিউসার্স ফর ইমপ্লিমেন্টিং বেসড এ্যাপ্রোচ উইথ সেক্সুয়াল এ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ রাইটস (এসআরএইচআর) এবং এইচআইভি ইস্যু লিংআপ বাংলাদেশ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বে ৭ দশমিক ১ বিলিয়ন মানুষের বসবাস। এর মধ্যে ৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন মানুষই মোবাইল ব্যবহার করেন। বাংলাদেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি। ১৯৯৩ সাল থেকে দেশে মোবাইল ফোনের প্রচলন ঘটে। ২০ বছরের ব্যবধানে দেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে ১২ কোটি হয়েছে। ২০১১ সালে দেশের সব উপজেলা পর্যায়ে নেটওয়ার্ক পৌঁছে যায়। ২০১৪ সালে মোবাইল ফোনের বিপ্লব ঘটে। মোবাইল ফোনের পাশাপাশি ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। বর্তমানে দেশে ৪ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন-ফেসবুক ব্যবহার করেন এক কোটি মানুষ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে শতকরা ৯৬ ভাগ মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ৮০ ভাগ কৃষক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করেন।
বিটিআরসি জানিয়েছে, দেশে মোবাইল ফোনের যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটেছে। যতটা ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি গ্রাহক সৃষ্টি হয়েছে। এখন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত চলে গেছে। এতে মানুষ তার চাহিদার অনেক কিছুই ঘরে বসেই পূরণ করতে পারছেন। এখন ইন্টারনেট গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। ইন্টারনেটের ব্যবহার গ্রাম পর্যায়ে চলে গেলে শহরের সঙ্গে গ্রামের ব্যবধান কমে আসবে।

About the Author

Write admin description here..

0 comments :

PaidVerts

ধন্যবাদ

এই ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। যদি ব্লগের কোন পোষ্ট ভাল লাগে তাহলে ব্লগটিকে শেয়ার করুন।

পৃষ্ঠাসমূহ

© 2013 IT News 24 এই সাইটের কিছু পোষ্ট সংগ্রহকৃত Blogger